গল্পঃ অনুভূতির অন্তরালে । লেখক - তাসফি আহমেদ
গল্পঃ অনুভূতির অন্তরালে । লেখক - তাসফি আহমেদ
গল্পঃ অনুভূতির অন্তরালে
তাসফি আহমেদ
পরিক্ষার হল থেকে বের হয়েই মিতু কথাটা বলল আমাকে ।ওর কথা শুনে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যাই।হা করে কিছুসময় ওর দিকে তাকিয়ে থাকি।ওর ভেতর কেমন জানি অস্থিরতা কাজ করছে।নিজেকে যেন স্থির রাখতে পারছে না।আবার আমার চোখের দিকেও তাকাচ্ছে না।কেবল এদিক সেদিক তাকাচ্ছে।আমি ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম।বললাম,
:কেন? আমি আবার কি করেছি?
ও অন্য দিকে তাকিয়ে বলল,
:কি করেছিস সেটা তুই ভালো করেই জানিস।
আমি কিছুটা অসহায় হয়ে ওর দিকে তাকালাম।বললাম,
:আমি আসলেই বুঝতে পারছি না তুই কি বলছিস।
ও চোখ গরম করে আমার দিকে তাকাল।তারপর বলল,
:চুপ! একদম চুপ! একদম ন্যাকামি করবি না।আমি যা বলেছি সেটাই সই।ভুলেও আমার সাথে আর কথা বলবি না।আমার সামনেও আসবি না। আমাকে আর ফোনও দিবি না।ফেবুতেও মেসেজ দিবি না।তোমাকে একখনি ব্লক দিচ্ছি দাঁড়া।
এই বলে ও ফোন বের করে কি জানি করল।আমি সেদিকে খেয়াল করছি না।আমি অন্য কিছু বুঝার চেষ্টা করছি।হ্যাঁ! আমি ওকে বুঝার চেষ্টা করছি।ওর ভিতরে কি চলছে সেটা বুঝার চেষ্টা করছি।ওর গরম করে রাখা চোখ গুলোর আড়ালে লুকিয়ে থাকা চোখ দুটোকে দেখার চেষ্টা করছি।ওর পাথর করে রাখা হৃদয়টার আড়ালে লুকিয়ে থাকা কোমল হৃদয়টাকে দেখার চেষ্টা করছি।ওর লুকায়িত ভালো আত্মা কে দেখার চেষ্টা করছি।ঠিক তখনই ও আমার দিকে তাকাল।খুব রাগ নিয়ে।এত বেশি রাগ যা ওর ওই মায়াবি চোখ দুটিতে মানাচ্ছে না।ওর মায়াবি চোখ দুটোতে এত রাগ শোভা পায় না।বলল,
:দিয়েছি।একেবারে ব্লক মেরে দিয়েছি।
এই বলে আমার সামনে দিয়ে হন হন করে চলে গেল।আমি ওর গমন পথের দিকে তাকিয়ে থাকলাম যতক্ষণ না ও চোখের আড়াল হচ্ছে।আমি আর দাঁড়ালাম না।আস্তে আস্তে বাড়ির পথে পাঁ বাড়ালাম।আর ভাবতে থাকলাম কোন অপরাধের কারনে আমাকে এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে।কি করেছি আমি।ফুটপাত দিয়ে হাঁটতেছি আর ভাবতেছি কি করেছি।কি করেছি। অবচেতন মনে অনেক গুলো কারন এসে হৃদয়ে হানা দেয়।কিন্তু তাদের কোনটিই যুক্তিসংগত নয়।কোনটিই উপযুক্ত কারন নয়। হঠাৎ ই মনে পড়ল রুপার কথা।পরিক্ষার হলে রুপা আমার সাথে বসেছে।মেয়েটা আমার বরাবর বসেছে। আমার ঠিক পিছনে বসেছে মিতু।এ নিয়ে অবশ্য মিতুর মন খারাপ ছিল।আমি তা আগ থেকেই আঁচ করতে পেরেছি।তবে এ নিয়ে আমাদের মাঝে কিছু হয় নি।আজ কি হল? আজ যখন পরিক্ষা দিচ্ছিলাম ঠিক তখন রুপার সাথে আমার কিছুটা আলাপ হয়।ওকে কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর জিজ্ঞেস করেছিলাম।ওর কাছ থেকে স্কেলটা নিয়েছিলাম।মেয়েটাও বেশ ভালো। হাসিটাও সুন্দর। তাই আমিও ওর সাথে হেসে হেসেই কথা বলছিলাম। একবারের জন্যেও পিছন ফিরে তাকাই নি।পরিক্ষার হলে ওর সাথে আর কথাও বলি নি। আমি ব্যাপারটা সিরিয়াসলি নেই নি।কিন্তু এই কারনটার জন্যে মিতু আমার সাথে এমন করল। হ্যাঁ মানছি আমি ওর ভালো বন্ধু। কিন্তু তাই বলে কি আমি অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকাতে পারব না? অন্য কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে পারব না? অবশ্য রুপার সাথে মিতুর খুব একটা মিলে না।এ যেন সাপে নেউলের সম্পর্ক। একটু কিছু হলেই বিশাল জগড়া বাধিয়ে দেয়।কিন্তু তাই বলে মিতু আমার সাথে এমন করবে? এমন বাঝে ব্যবহার করবে? মেয়েটা বোধ হয় খুব কষ্ট পেয়েছে।তাই এমন করেছে।মিতু তো এমন মেয়ে না।ও এমন করতে পারে না।নিশ্চই খুব কষ্ট পেয়েছে।কিন্তু এখন তো ক্ষমা চাওয়ারও উপায় নেই।আমাকে তো সে সব কিছু হতে ব্লক দিয়ে দিয়েছে।কি যে করি? আচ্ছা ও কষ্ট পেয়েছে কেন? আমাকে ভালোবাসে তাই? নাকি অন্য কিছু। কথাটা মনে পড়তেই ঠোটের কোনায় মৃদু হাসি ঠাই পেল।ভাবতেই যেন মন ভালো হয়ে যায়।আনন্দে পুরো শরির শিউরে উঠে।হঠাৎ ই একটা গাড়ির কর্কশ হর্ন কানে ভেসে এল।হুস ফিরতেই নিজেকে মাঝ রাস্তায় আবিষ্কার করি।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে রাস্তার মাঝে চলে এলাম খেয়ালই করি নি।পিছন ফিরে তাকানোর আগেই সজোরে একটা আঘাত লাগে আমার দেহে।হাত পাঁচেক দুরে গিয়ে ছিটকে পড়ি।মাথাটা প্রচন্ড ব্যাথা করছে।ব্যাথায় ককিয়ে উঠলাম।তারপর আর মনে নেই।
.
মিটমিট করে যখনই চোখ খুললাম ঠিক তখনই দেখলাম মা পাশে বসে আছে।চোখ দুটো কিছুটা লাল হয়ে আছে।চোখের নিচে কালো কালি যেন কেউ লেপ্টে দিয়েছে।বিষন্ন মনে বসে আছে।আমার যে জ্ঞান ফিরেছে তা হয়ত তিনি এখনও অনুধাবন করতে পারেন নি।আমি ঠিক ভালো ভাবে নড়তেও পারছি না।মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।আমি চারদিকে চোখ বুলিয়ে নিলাম।আমার বাঁপাশে একটা বড় জানালা আছে।ওখানে সাদা পর্দা দেওয়া। আর একটা জানালাও নেই। আমার মুখ বরাবর একটা ডান দিকে দরজাটা।আমার পাশে একটা টেবিল আছে।আর মাথার উপর ঝুলছে একটা সেলাইন।এই রুমটায় এসি আছে।হাসপাতালের এমন পরিবেশ সত্যিই আমার খুব ভালো লেগেছে।এক রাস মুগ্ধতা আমায় ছুঁয়ে গেল বলে।কিন্তু মুগ্ধতাটা ছিল ক্ষনিকের। মনে পড়ে যায় সেই মিতুর কথা।যার কথা ভাবতে ভাবতে আমি মরতে বসেছি।আচ্ছা! ও কি আমাকে দেখতে এসেছে? নাকি ও এখনও জানেই না যে আমি অসুস্থ। হতেও পারে।হঠাৎ ই দরজা খোলার আওয়াজ এল।আমি তাকাতেই দেখিলাম বাবা রুমে ঢুকল। তাকে দেখতেই আমার হৃদয়টা কিছুটা কুছকে গেল।
একটু সংকুচিত হয়ে গেল।আমার বাবার এমন রুপ আমি কখনোই দেখি নি স্বভাবত তিনি অত্যন্ত হাসি খুশি ওয়ালা মানুষ। কিন্তু এখন তাকে কেউ দেখলে বলবে আসি বছরের বুড়ো।বিষন্নতার কালো ছায়া উনার উজ্জ্বল চেহারাটাকে কেমন যেন কালো করে রেখেছে। আমাকে দেখা মাত্রই বাবা দ্রুত এগিয়ে এলেন।এসেই বললেন,
:কি রে বাবা তোর জ্ঞান ফিরেছে?
আমি কিছু বলতে পারলাম না।শুধু তাকিয়ে থাকলাম।পাশ থেকে মা বলে উঠল,
:কিরে কখন জ্ঞান ফিরল? আর এখন কেমন লাগছে তোর?
আমি এখনও কিছু বলতে পারলাম না।শুধু তাকিয়ে থাকলাম।দেখলাম বাবা মায়ের মুখটা এখনও বিষন্ন হয়ে আছে।তাদের শান্তনা দেওয়ার জন্যে আমি শুকনো একটু হাসি দিলাম।তা দেখেই তারা কান্না মিশ্রিত হাসি দিল।আমার কেন জানি আবার খুব ভালো লাগল।যা হৃদয়কে মূহুর্তে শিতল করে দিল। কোথাকার কোন মিতুর কথা আমি ভুলে গেলাম।পৃথিবীতে এই দুইটা মানুষই আমার আপন।খুব কাছের।আমাকে তারা একটুও কষ্ট পেতে দেয় নি। ঠিক একটা মুরগি যেমন তার বাচ্ছা গুলোকে নিজের দুডানার নিচে পরম মায়ায় আগলে রাখে, আমার বাবা মাও তাদের ভালোবাসার ছায়া দিয়ে আমাকে আগলে রাখে।পবিত্র সেই ভালোবাসার ছায়া।যেখানে কোন ধোকা নেই।নেই হারিয়ে ফেলার ভয়।মা উঠে এসে আমার পাশে বসলেন। বাবা বসলেন মায়ের জায়গায়। মা আমার কপালে হাত বুলালেন।তারপর একটা চুমু দিলেন কপালে।আস্তে আস্তে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন।আমি অদ্ভুত ভালো লাগার রাজ্যে হারিয়ে গেলাম।সেখানে শান্তি আর শান্তি।মায়ের এমন ছোঁয়া আমি বহুবার পেয়েছি এবং প্রতিবারই ভিন্ন স্বাহ পেয়েছি।অদ্ভুত সেই স্বাদ।যেন তৃপ্তি হয় না।এক সপ্তাহ ছিলাম হাসপাতালে।তারপর বাড়ি ফিরে আসি।আমার কাছে একটা জিনিস খুব অদ্ভুত লাগল।এতটা দিন হয়ে গেল মিতু আমাকে একটি বারের জন্যেও দেখতে এল না। নাকি এখনও জানেও না আমার কথা।আচ্ছা আমার মোবাইলটা কই। আছে নাকি হারিয়ে গিয়েছে।মাকে ঢেকে বললাম।তিনি জানালেন যে মোবাইলটা আর পাওয়া যায় নি।মোবাইল কেন? আমার মানিব্যাগটাও নাকি পাওয়া যায় নি।কেউ হয়ত মেরে দিয়েছে।কি অদ্ভুত! কেউ আমাকে বাঁচানো নিয়ে ব্যাস্ত আর কেউ চুরি নিয়ে।সত্যি পৃথিবীটা বড় অদ্ভুত! অদ্ভুত এই পৃথিবীর মানুষ গুলো।
.
আমি অনেকটা সুস্থ হয়ে গেলাম।খুব সকালে ভোর থেকে উঠে। একটু হাঁটাহাটি করলাম।বাইরের স্নিগ্ধ বাতাস গায়ে লাগালাম। পুরপুরে মন নিয়ে পথ দিলাম ভার্সিটির পথে পরিক্ষা আর দেওয়া হল না।কতদিন দেখা হল না মিতুর সাথে। রুপার সাথেও। আচ্ছা রুপা আর মিতু কি এখনও জগড়া করে? করলে কে থামায়? আমি তো ছিলাম না।তাহলে কে থামাতো? নাহ্! শিক্ষা হয়েছে আমার।আর কখনো চলার পথে ভাবনায় ডুবে থাকব না।থাকলে কি হবে সেটা আমি জেনে গেছি।ক্লাসের সামনে আসতেই দেখা মিলল মিতুর।ওমা! একি? মেয়েটার চেহারাও দেখি বিষন্ন হয়ে আছে।চোখের নিচে কালি পড়ে আছে। ঠিক যেমনটা মায়ের ছিল।সে দরজা হতে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিল।আমাকে দেখা মাত্রই মেয়েটার বিষন্নতায় মাখা চেহারাটা কেমন যেন উজ্জ্বল হয়ে গেল।কিছু একটা বলতে গিয়েও থেকে গেল।আমার মাঝে হঠাৎ ই চাপা অভিমান কাজ করল।খুব বেশি অভিমান। আমি মাথা নিচু করে ক্লাসে ঢুকে গেলাম।সবাই জিজ্ঞেস করতে লাগল কি হিয়েছে? আমি কেন এতদিন আসি নি? কেন পরিক্ষা দেই নি? তাদের এমন সহানুভূতি দেখে আমি মুগ্ধ হলেও কেন জানি আমার খুব খারাপ লাগতে লাগল। মিতুর জন্যে চাপা অভিমান কাজ করছে।সবাই যখন আমাকে নিতে ব্যাস্ত ঠিক তখন মিতু একটু দূরে দাঁড়িয়ে তা দেখল কেবল।একটু এগিয়ে এসে কথাও বলল না।হয়ত পুরোন অভিমানটা এখনো কাটে নি।হঠাৎ ই কোথা থেকে হস্তদন্ত হয়ে রুপা ঢুকল ক্লাসে।এসেই একেবারে এক গাধা প্রশ্ন ছুড়ে দিল।আমি কোনটা রেখে কোনটার উত্তর দিব ভেবে পাচ্ছি না।তারপর ও যা করল তার জন্যে আমি একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না।হুট করেই আমার হাত ধরল। তাও আবার মিতুকে দেখিয়ে।আমি একটু ভালো করে তাকাতেই মিতুর মাঝে সেই অস্থিরতা দেখলাম।সেদিন যেটা দেখেছিলাম।নিজের হাতটা মুষ্টি করে ধরে আছে।দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে তা দেখছে। বাঁপাটা একটু একটু কাঁপাচ্ছে। আমি ওর দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।তারপর রুপা চট করেই আমাকে জড়িয়ে ধরল।যার জন্যে আমি একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না।পুরো ক্লাস আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।এই পরেই এক ঝাক তালি বাজল।সবাই মৃদু স্বরে চেঁচিয়ে উঠল।হঠাৎই মিতু দৌড়ে এল।এক টানে রুপাকে ছাড়িয়ে নিল। তারপরেই এক ধাক্কাতে রুপাকে তাসফির কোলে ফেলল।আমি সেদিকে তাকানোর আগেই দেখলাম মিতু আমার শার্টের কলার চেপে ধরে টনতে লাগল।এত জোরে কেউ আমাকে আগে কখনই টানে নি। আমি পিছন ফিরে তাকাতেই দেখলাম রুপা হাসছে। তারপর বৃদ্ধা অঙ্গুল উঁচিয়ে আমাকে দেখাল।ওর সাথে সাথে পুরো ক্লাসের সবাই একই কাজ করল তার মানে এটা অভিনয় ছিল।আরেকটা জিনিস দেখলাম।দেখিলাম তাসফি রুপার হাত ধরে আছে।এই জড়িয়ে ধরবে বলে।কিন্তু আমি তা দেখি নি।মিতু আমাকে টেনে নিয়ে গেল।
.
মিতু সেই কখন থেকেই নাক ফুলিয়ে কান্না করছে।নাকটা লাল হয়ে আছে।কিন্তু একটা কথাও বলছে না।আমার মাঝে আবার সেই চাপা অভিমান
কাজ করল।বললাম,
:আমাকে এখানে নিয়ে আসার মানে কি হু? কেন আমাকে এখানে নিয়ে এসেছিস?
:.....
:কিছু বললে বল।তা না হলে আমি যাই।
এই বলে উঠতে যাব ঠিক তার আগেই আমাকে টেনে ওর কাছে নিল।একেবারে ওর খুব কাছে। ওর নাক দিয়ে গরম নিঃশ্বাস আমার মুখে পড়ছে।আমার কাছে সেটা কেন জানি খুব ভালো লাগল।ও আমার চোখের দিকে তাকাল।কিছু বলল না।আমিও তাকিয়ে থাকলাম। দেখলাম সেই দুচোখকে।যেটা আমি সেদিন খুঁজেছি।সেই আত্মাকে আমি দেখেছি যেটা সেদিন খুঁজেছি।কিছু সময় পর ও হুট করেই আমাকে জড়িয়ে ধরল।খুব শক্ত করে আমি উষ্ণ শরিরটার সাথে আমাকে জড়িয়ে ধরল।মিসে গেল আমার বুকের সাথে। আমার গলা চেপে ধরে কান্না শুরু করে দিল উচ্চ স্বরে।ভেজা কন্ঠে বলল,
:প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দে।প্লিজ! আসলে আমার সেদিন রাগ ছড়ে গিয়েছিল মাথায়।তাই কি না কি করেছি আমায় প্লিজ ক্ষমা করে দে।আমি আর কখনও এমন করব না।একদম তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করব না।প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দে।
আমার চোখ দুটো কেন জানি ভিজে এল।বললাম
:এত কান্নার কি আছে। আমি তো তোকে সেই কবেই ক্ষমা করে দিয়েছি।পাগলি।কান্না থামা।
:একটা সত্যি কথা বলবি?
:হুম।তুই জানিস আমি মিথ্যা বলি না।
:তুই কি আমাকে আগ থেকেই ভালোবাসতি?
: হুম।অনেক!
:জানিস। আমিও না তোকে খুব ভালোবাসতাম।
:আমি জানি।
:সত্যি জনিস!
:হুম। সব জানি।তুই আমি আমরা একে অপরকে জিবনের চেয়ে ভালোবাসি। এই সব আমি জানিরে পাগলি।
ও একটু সময় নিয়ে বলল,
:শুন!
:বল!
:রুপা...
বলতে হবে না।বুঝে গেছি।
ও কিছু বলল না।কেবল আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে। আমিও তাই করলাম। দুবাহু ডোরে আমি আবদ্ধ করলাম ওকে।
.
গল্পটা লেখা শেষে আমি চাঁদের দিকে তাকালাম।দেখলাম সে হাসছে।হাসির সাথে অজস্র ধারায় আলো ঝরছে।যেন বলছে,
:কি সব লেখস তুই আমি বুঝি না।এগুলা লিখে লাভ কিরে বলত?
আমি মৃদু হেসে বলি,
:লাভ কি জানি নারে।তবে শান্তি পাই।আমার আত্মাটা শান্তি পায়।এক রাস ভালো লাগা কাজ করে।
চাঁদ আবার হাসল।তা দেখে আমিও হাসলাম। দুজনেই যেন খুব সুখি।খুব!
গল্পঃ অনুভূতির অন্তরালে
ভুলত্রুটি মার্জনীয়
-তাসফি আহমেদ