Bangla Golpo: অপরিচিতা ২
মেয়েটকে অনুসরণ করতে করতে আমি এক সময় তার বাড়ির সামনে গিয়ে পৌঁছালাম।মেয়েটা ভিতরে চলে গিয়েছে।আমি বাইরে দাঁড়িয়ে বিল্ডিংটাকে ভালো ভাবে পরক্ষ করতে থাকলাম।আমি প্রথমেই মেয়েটার চালচলন দেখে বুঝে গিয়েছিলাম যে মেয়েটা অবশ্যই কোন বড় লোক বাবার দুলালী কন্যা হবে। এখানে এসেই তার প্রমাণ পেলাম।গেইট দিয়ে ঢুকার সময়ও দারোয়ান মহাশয়কে দেখলাম কেমন জানি নম্রতা দেখাচ্ছে।বাড়িটাও খুব সুন্দর।খুব বড়, সুসজ্জিত একটা বাড়ি।আমি সচরাচর এমন বাড়ি দেখি নাই।আমি কিছুটা সময় বাসাটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।তারপর বাসার পথ ধরলাম।হাঁটছি আর ভাবছি মেয়েটাকে কিভাবে পটানো যায়।মেয়েটাকে পটানো ছাড়া কোন উপায় নেই।মেয়েটার সামনে গিয়ে দেখা করলে,কথা বললে ও কখনই আমার প্রতি দূর্বল হবে না।উল্টা চড় খাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।আমি কোন ভাবেই কোন মেয়ের হাতে চড় খেতে চাই না।আমাকে অন্য রাস্তা বের করতে হবে।মেয়েটাকে দেখেই বুঝা যায় মেয়েটাকে পটানো খুব একটা সহজ হবে না।আমাকে শক্তপোক্ত কোন প্লান করতে হবে।
.
রাত প্রায় সাড়ে বারোটা।আমি বিছানায় শুয়ে আছি।ঘুম আসছে না।কোন মতেই চোখের দু পাতা এক করতে পারছি না।কেবল মায়াবীনীর কথাই মনে পড়ছে।কল্পনায় কেবল সেই অপরিচিতাইই ভেসে উঠছে।আমি নিজেকে ঠিক কন্ট্রোল করতে পারছি না।কোন মতেই মায়াবীনীকে কল্পনা হতে দুর করতে পারছি না।কোন মতেই না।বিকেলে এক বন্ধু ফোন করেছিল।ওরা সবাই আমার উপর প্রচন্ড রেগে আছে।বেশ ক'দিন ওদের সাথে কথাও হয় না।রেগে থাকারই কথা।এক সময় আমি ওদের ঢেকে এনে আড্ডা দিতাম। অথচ আজ আড্ডায় আমি নেই।বেশ বকাঝকা করেছে বন্ধু নিশাদ(ছেলে)।আমি কিছুই বলি নাই।কেবল শুনে গিয়েছিলাম।
.
আমি ঠিক ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছি যে আমি প্রচন্ড ভাবে মেয়েটার প্রেমে পড়েছি।প্রেম যে এভাবে আমায় ছন্নছাড়া করে ছাড়বে এ আমার জানা ছিল না।সত্যিই জানা ছিল না। এখন কেবল একটাই প্রতিক্ষা। কখন ভোর হবে।কখন আমি মায়াবীনীর দেখা পাব।আমি বেশ অস্থির হয়ে পড়ছি।শেষ রাতে কখন ঘুম এসেছিল সেটা আমার জানা ছিল না।
যথা সময়ে এলার্মটা বেজে উঠল।আমি খুব জলদি উঠে গেলাম।ফ্রেশ হয়ে মর্নিং ওয়াকের ড্রেস পরে তৈরি হয়ে গেলাম। নতুন কিনেছি ড্রেসটা।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে বেশ ভালো ভাবে দেখে নিলাম।নিজেকে ভালো ভাবে পরক্ষ করলাম। কোথাও কোন খুঁত যেন দেখা না যায়।
.
কানে হেডফোন গুঁজে হিম শিতল বাতাস ভেদ করে আমিও মর্নিং ওয়াক করছি।নিজের মাঝে এমন পরিবর্তন দেখে আমি সত্যিই অবাক হচ্ছি।অন্য সময় হলে কেউ আমাকে এত সকাল ঘুম থেকেও উঠাতে পারত না।কথাটা ভেবে খানিকটা মজা পেলাম।আনমনে হেসে উঠলাম।দূর থেকে দেখলে কেউ বলবে লোকটা পাগল।আপনাআপনি হাসে।বলতেই পারে।তাকে বলার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।সে যাই বলুক।আমি গায়ে না মাখলেই চলে।
সামনের দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে দৌড়াতে থাকলাম।যখন দেখলাম মায়াবীনী আসছে আমি ঠিক তখনই বুকের মাঝে কেমন যেন শিহরন অবুভব করতে থাকলাম।শান্ত,কোমল প্রেম শিহরন।ও যতই এগিয়ে আসছে ততই আমার বুকের ধপ ধপ শব্দটা বেড়ে যাচ্ছে।আমি নিজেকে সংযত রাখলাম। ওর সামনে নিজেকে মোটেও দূর্বল করা যাবে না।ওকে কোন ভাবেই বুঝতে দেওয়া যাবে না যে আমি ওর প্রতি প্রচন্ড দূর্বল। বুঝতে পারলে আমার সব প্ল্যান বেস্তে যাবে।কোন মতেই হতে দেওয়া যায় না।ও যখন আমার থেকে হাত দুয়েক দূরে তখন আর নিজেকে সংযত রাখতে পারলাম না।কেন জানি মনে হল ওকে এখন আমায় একবার দেখতেই হবে।যে করেই হোক।একবার দেখতেই হবে। না দেখলে যেন আমি দম বন্ধ হয়ে মারা যাব।আমি আড় চোখে তার দিকে তাকালাম একবার। ঠিক তখনই আমি দেখলাম মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি তাকাতেই সে চোখ নামিয়ে নিল।তারপর পাশ দিয়ে চলে গেল।এমন একটা ভাব ধরল যেন কিছুই হয় নি।তবে এই প্রথম তার সাথে আমার চোখাচোখি হয়েছে।একেবারে সরাসরি। আমি যখন ওর চোখে চোখ রাখলাম ঠিক তখনই আমার বুকের ভেতর অন্য রকম একটা আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল।যেন বুকের বাঁ পাশটা আলোড়নের ঝাপটা ঠিক সয়ে উঠতে পারছে না।ওর চোখে কিছু একটা ছিল।যা সরাসরি আমার চোখ দিয়ে আমার হৃদয়ে চলে গিয়েছে।গিয়েই তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে।ও যখন আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনও আমাত বুকের বাঁ পাশের আলোড়ন বেড়েই যাচ্ছিল।যখন চলে গেল ঠিক তার কিছু সময় পর আবার সব ঠিক হয়ে গেল।আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।ও আমার পাশ দিয়ে গেলে আমার এমন হয় কেন? কেন বারবার তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে হয়?
.
মেয়েটা সেদিন যেই বেঞ্চিতে বসেছিল আজকেও ঠিক সেই বেঞ্চিতেই বসেছে।হাতে থাকা পানি হতে কিছুটা পানি খেল।কিছু সময় সেখানে বসেছিল ও।আমি ঠিক ওর বেঞ্চির পাশ বরাবর দুইটা বেঞ্চি পরে বসেছি।বেঞ্চি গুলোর প্রতিটার দূরত্ব প্রায় দশ পনেরো ফিট হবে।আমি ওখানে বসে আড় চোখে ওকে দেখতে থাকলাম। সেদিনের পর থেকেই আমার ওকে পটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়ছিল।খুব সকাল সকাল উঠে দৌড়াতে চলে আসতাম।এসেই ওকে দেখতাম।তবে সেটা ওর আড়ালে।ওর সামনে এমন একটা ভাব ধরতাম যেন আমি ওকে এই পৃথিবীতে আগে কখনই দেখি ন।প্রথম কয়েক দিন কোন কাজ হল না।তবে আমার কেন জানি মনে হতে থাকল কাজ অবশ্যই হবে।আমি চালিয়ে যেতে থাকলাম।ওর ভার্সিটি ছিল আমাদের এখান থেকে দশ মিনিটের পথ।সেখানে এক সময় আমিও পড়েছিলাম।তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হল আমি মেয়েটাকে আগে দেখি নি।কেন দেখি নি সেটাও জানি না।বড় আফসোস হতে লাগল আমার।আগে দেখলেই ভালো হত।এখন কি প্রেম করার সময়? এখন হচ্ছে বিয়ের সময়।কোথায় বিয়ে করব না এখন প্রেম নিয়ে ছোটাছুটি!
.
বন্ধু গুলারে অনেক কষ্টে সামলিয়ে নিয়েছি।ব্যাপারটা ওদের বুঝিয়ে বলেছি।তাই আমার কিছুই করে নি।যা হামলা হয়েছে আমার মানি ব্যাগের উপরেই।কি আর করার।মুখ বুঁজে সহ্য করলাম আর কি? তারউপর সিফাত তো খাওয়া শুরু করলে আর শেষই হবার কোন লক্ষ্যন থাকে না।তারপর মাসুদ! নিশাদ আর রাফি এদের মধ্যে রাফি একটু বেশি খায়।নিশাদ খুব একটা খায় না।এ জন্যে ওর স্বাস্থ্যও হয় না।আমি কেবল টাকার কথা চিন্তা করেই গিয়েছি আর ওদের খাওয়া দেখেছি।পরে অবশ্য আমিও খেয়েছি।
.
একদিন হুট করেই ভার্সিটি চলে গেলাম।কিছু পুরনো বন্ধুর খুব প্রয়োজন এখন।ওরা আসলে আমাদের সাথে পাশ করে বের হতে পারে নি।তাই এখন আবার পরিক্ষা দিবে।আমি মূলত যাচ্ছি মেয়েটাকে দেখতে।উঁহু। মেয়েটা না।ওর একটা নাম আছে।মিহিন! ওর নাম মিহিন।ওকেই দেখতে যাচ্ছি আমি।বন্ধু গুলোকে দেখতেই আমি দৌড়ে গেলাম।কুশল বিনিময় করলাম।খুব মজাও করলাম ওখানে।পুরো ক্যাম্পাসটাও ঘুরলাম।যখনই দেখলাম মিহিন ওর বান্ধুবিদের সাথে ক্যাম্পাসের এক কোনার দিকে যাচ্ছে। আমি এবং ফ্রেন্ড গুলো সহ সেদিকেই গেলাম।এমন একটা ভাব ধরলাম যেন মিহিন নামক মেয়েটাকে আমি চিনিই না।তবে আড়া চোখে দেখলাম বেশ কয়েকবার। ও মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকাচ্ছে।আমাকে দেখছে।ব্যাপারটা আমার ভালো লাগল।সেদিনের মত চলে এলাম।তবে এরপর মাঝে মাঝে ক্যাম্পাসে যেতাম।তবে মিহিনকে সামনাসামনি সম্পূর্ন এড়িয়ে চলতাম।আড় চোখে দেখা একদমই মিস হত না।
.
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে আমি রিতি মত চলে এলাম মায়াবীনীকে দেখতে।কিছুক্ষণ এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করলাম।মিহিনের আসার একটা নির্দিষ্ট সময় ছিল।আজ সেটাও পেরিয়ে গেল।তবুও মিহিন আসল না।আমার খুব খারাপ লাগতে লাগল।হাতে পানির বতল নিয়ে প্রতিদিন মিহিন যেই বেঞ্চিটাতে বসত আমি ঠিক সেই বেঞ্চিটাতে বসে পড়লাম।মন খারাপ করে বসে থাকলাম।পাশের বেঞ্চি গুলোর দিকে তাকিয়ে দেখলাম আস্তে আস্তে সেগুলোয় মানুষ বসে গিয়েছে।কেউ দাঁড়িয়ে আছে।হাত নাড়ছে।ব্যায়াম করছে কেউ।কেউ বসে বসে একটু বিশ্রাম নিচ্ছে।আমরা প্রতিদিন এই সময়ে বাড়ি যেতাম।আমি যখন যেতাম ঠিক তারপর এই শান্ত জায়গাটা একেবারে কোলাহলময় হয়ে যেত।এরা একটু দেরিতেই আসে।আমি মথা নিচু করে বসে থাকলাম।ভালো লাগছে না।কিছুই ভালো লাগছে না।কেমন জানি লাগছে।শূন্যতা অনুভব করছি আমি।আজ কি ও আসবে না।আজ কি ওর সাথে আমার দেখা হবে না? আমি চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে রইলাম কিছু সময়।ঠিক তারপরই কেউ একজন ধপাস করে আমার পাশে বসল।বসেই জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকল।যেন খুব দৌড়িয়ে এসেছে সে।ভীষন ক্লান্ত। আমি মাথা তুললাম না।নিচের দিকে তাকিয়ে থাকলাম।মিহিন আসে নি।তাই মন খারাপ।ঠিক তখনই একটু আগে পাশে যে বসেছি সে বলল,
:একটু পানি দেওয়া যাবে প্লিজ?
ঠিক তখনই আমার হার্ট যেন কয়েক গুন দ্রুত ধপধপ শব্দ করতে থাকল।মিহিনের সেই সুরেলা কন্ঠ আবার আমার হৃদয় নাড়া দিল।আমি চট করেই পাশের মেয়েটার দিকে তাকালাম।মিহিন! মিহিন এসেছে।আমার পাশে বসেছে।আমি ঠিক তখনও ঘোরের মাঝে ছিলাম।নিজেকে ঠিক নিশ্বাস করাতে পারছিলাম না। মেয়েটা আবার বলল,
:এই যে হ্যালো! একটু পানি দেওয়া যাবে?
আমি বোকার মত নতুন কিনে আনা পানির বতলটার দিকে তাকালাম একবার।এখনো খুলি নি ওটা।আমি তোতলাতে তোতলাতে বললাম,
:জি-জি-জি- জিই।অ-অ-অবশ্যই।প্লিজ!
মেয়েটা মৃদু হাসল।তারপর পানির বতল নিল আমার কাছ থেকে।আমি অন্য দিকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।মনে মনে হাসলাম আমি।ঠোটের কোনটা একটু চওড়া হল।আমি অদ্ভুত ভাবে আবিষ্কার করলাম যে আমার এতক্ষণ প্রচন্ড খারাপ লাগছিল এখন মোটেও খারাপ লাগছে না।পূর্বে যতটা খারাপ লেগেছিল এখন ঠিক তার চেয়ে কয়েক গুন ভালো লাগছে।আমি তা ঠিক বলে বুঝাতে পারব না।
:নিন।থ্যাংকিউ। আসলে তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে ভুলে পানির বতলটা ফেলে এসেছি।
:ইটস ওকে।
আমি মৃদু হেসে ভভ্র ভবে ওর হাত থেকে বতলটা নিলাম।কিছু সময় দুজনেই চুপচাপ বসে থাকলাম।কেউ কিছু বললাম না।আমার মনের ভেতর আবার সেই আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।ধপ ধপ শব্দটা বেড়েই চলছে।কিছু সময় পর মিহিন বলল,
:নাম কি আপনার?
প্রশ্নটা শুনে আমি একটু হকচকিয়ে গেলাম।বললাম,
:তাসফি।আপনার?
:মিহিন।তানিয়া আফরোজা মিহিন।আপনার নামটা একটু মেয়েলি হলেও অনেক কিউট।এছাড়া আর নাম নেই আপনার?
:আছে।সাকের আহমেদ।
:বাহহ! দারুন তো।আপনার দুটো নামই খুব সুন্দর।
:ধন্যবাদ।আপনার নামও ভারি মিষ্টি।
ও আবারো একটু হাসল। আমি আবারো ওর দিকে তাকিয়ে একটু মুগ্ধ হলাম।আমি ওকে যতই দেখছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি।ও বলল,
:ধন্যবাদ।
এরপর থেকে আমাদের দেখা হলেই টুকিটাকি কথা হত।এক সময় কথা বলাটা বেড়ে যায়।বিশেষ করে মিহিন।প্রচন্ড কথা বলে মেয়েটা।যখন দুজনে একসাথে হাঁটি মেয়েটা তখন এত এত কথা বলে তা আমি বলে বোঝাতে পারব না।আর সব সময় আমার "তাসফি" নামটা নিয়ে হাসত। আমি কিছুই বলতাম না।কেবল শুনে যেতাম।আমার একটাই কাজ।ওর কথা গুলো শুনা।আর ড্যাবড্যাব করে ওকে দেখা।এটাই যেন আমার প্রধান কাজ।এছাড়া আর কোন কাজই আমার নেই।
.
ওর ফোন নাম্বারটাও চেয়ে নিয়েছি আমি।মাঝে মাঝে ফোনে কথা হত।বাইরে কফি খেতে যেতাম মাঝে মাঝে।ভার্সিটি বাদে মেয়েটা সাধারনত বাইরে খুব একটা বের হয় না।খুব প্রয়োজন হলে বের হয়।ওর নাকি বাইরে ঘুরাঘুরি করা একদমই পছন্দ না।এত কোলাহল ওর নাকি মোটেও ভালো লাগত না।তাই সারাদিন ঘরে বসে থাকত।কিন্তু যবে থেকে ওর সাথে আমার খুব একটা ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে ঠিক তারপর থেকেই আমি আর ওকে একা থাকতে দেই নি।বাইরে বের করে ঘুরতে গিয়েছি ভিবিন্ন যায়গায়।খুব মিশুক মেয়েটা। কারো সাথে খুব তাড়াতাড়ি বন্ধুত্ব করতে পারে ও।এটা খুব ভালো একটা গুন ওর।
.
বেশ কিছুদিন পর আমার কেন জানি মনে হল মিহিন আমার প্রতি খুব দূর্বল হয়ে পড়েছে।আমার উপর খুব ডিপেন্ডেবল হয়ে গেছে।আমি ঠিক তখনই কাজটা শেষ করে ফেলি।মিহিনকে দেখা করতে বলি।
মিহিন দেখা করতে এসেছিল।আমি ভেবেছিলাম ও শাড়ি পরে আসবে।কিন্তু ও শাড়ি পরে আসে নি।নরমাল ড্রেসেই এসেছে।আমি প্রচন্ড নিরাশ হয়েছিলাম সেদিন।খারাপও লেগেছিল।তবুও নিজেকে সংযত রাখলাম।
:কি ব্যাপার! কেন ঢেকেছ?
:খুব জরুরি কিছু কথা ছিল।
:তা মশাই কি এমন জরুরি কথা শুনি!
আমি তখনও কিছু বললাম না।কথা গুলো গুছিয়ে নিলাম।তারপর বললাম,
:তোমাকে আসলে প্রথমে বই মেলায় দেখি।প্রথম দেখাতেই প্রচন্ড ভালো লাগে যায় তোমায়। আমি তখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারি নি কি হতে যাচ্ছে আমার সাথে।আমি তোমার প্রেমে পড়েছি সেদিন।তুমি বিশ্বাস করবে কি না জানি না তবে সেদিনের পর থেকে আজ পর্যন্ত আমার কল্পনায় কেবল তোমার ছবিই ভাসে।আমি ঠিক অন্য কাউকে কল্পনা করতে পারি না আর।তোমাকেই কল্পনা করি।ভীষণ ভালোবেসে ফেলি তোমায়।দৈনিক বসের ঝাড়ি শুনি।বন্ধুদের আড্ডায় যাই না অনেক দিন।মা বাবা খুব চিন্তায় পড়ে যায়।আমাকে বারবার জিজ্ঞেস করে।আমি বলতে পারি না।বলতে পারি না হুট করে কোন এক মায়াবীনীকে দেখে ভালোবেসে ফেলি।মায়াবীনী মায়া করে আবার হারিয়ে যায়।আমি তাকে খুঁজতে থাকি।এরপর তোমায় ভোরে ওই জায়গাটাতে দেখি।মর্নিং ওয়াক এর সময়।সেদিনের পর থেকে আমি সকাল সকাল উঠে মর্নিং ওয়াক করতে চলে আসি এখানে। কেবল তোমাকে ভালোবাসি বলে।অথচ এর পূর্বে কেউ কখনই আমাকে এত সকালে ঘুম থেকে উঠাতে পারে নি।ভার্সিটি যাই কেবল তোমায় এক নজর দেখব বলে।কত দিন অফিস ফাঁকি দিয়েছি তার অন্ত নেই মিহিন।সেদিন সকালে তুমি আসতে দেরি করেছিল বলে আমি কতটা কষ্ট পেয়েছি সেটা তোমায় বলে বুঝাতে পারব না।কিছুতেই না।আমি তোমায় প্রচন্ড ভালোবেসে ফেলেছি মিহিন।খুব ভালোবেসে ফেলেছি।প্লিজ আমায় ফিরিয়ে দিও না।কষ্ট হবে আমার।
আমি এতটুকু বলে ফুলের তোড়াটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিলাম।ঠিক তারপরই ও আমাকে ঠাশশ ঠাশশ করে দুটো চড় দিল কেবল।চড় দিয়েই মেয়েটা নিজে কেঁদে দিল।ছলছল চোখে,কাঁদ কাঁদ কন্ঠে বলল,
:আমি তোমাকে ভালো ভেবেছিলাম।ভেবেছিলাম সবার থেকে তুমি একটু আলাদা।প্রেম ট্রেম নিয়ে তুমিও খুব একটা মাতামাতি কর না।তাই তোমার সাথে বন্ধুত্ব করলাম।কিন্তু এখন! এখন তুমি প্রুফ করলে যে তোমরা সব পুরুষই এক।এর আগে পুরুষ দের প্রচন্ড ঘৃনা করতাম আমি।কিন্তু তোমার সাথে পরিচয় হবার পর সেই ঘৃনাটা একটু কমে এল।এখন সেটা আরো কয়েক গুনে বেড়ে গেল।খবরদার! এর পর যদি আমার সাথে আর একবার যোগাযোগের চেষ্টা করিস না তাহলে তোকে জেলে দিব।স্টুপিড! নিচু একটা।
:প্লিজ মিহিন।বুঝার চেষ্টা কর।আমি তোমাকে...
:চুপ! একদম চুপ! একটা কথাও বলবি না।তোর ওই মুখে আমার নামটা মানায় না।
এই বলে সে হনহন করে চলে গেল।কেবল আমি বসে থাকলাম।ডুকরে কেঁদে উঠলাম।ফুলের তোড়াটা ছুড়ে মারলাম। দু হাত দিয়ে মুখটা ঢেকে কান্না শুরু করে দিলাম।
.
অনেকটা পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম আমি।বেশ কয়েকবার সুইসাইড করতে গিয়েছিলাম।পারি নি সুসাইড নামক জঘন্য কাজটা করতে। খুব হেল্প করেছিল বন্ধু গুলো।আমাকে ঠিক আগের অবস্থানে নিয়ে আসতে চেষ্টা করেছে ওরা।বাবা মা বিয়ের জন্যে খুব চাপ দিচ্ছিল।কিন্তু আমি সায় দেই নি।মোটেও না।আমি মিহিনের চোখ দেখেছি।আমাকে যখন মেরেছিল তখন ও কান্না করছিল।ওর চোখে জল ছিল।আমাকে যদি এতই ঘৃনা করত তাহলে আমাকে মেরে নিজে কান্না করেছিল কেন? ও নিশ্চই আমাকে ভালোবাসত।তা না হলে ও এমন করত না।আমি ছুটে গিয়েছি ওদের বাড়িতে।ওকে পাই নি সেদিন।ও আমেরিকা চলে গিয়েছে।ওখানে নাকি ওর কোন ফুফু আছে।উনার কাছেই থাকবে এবং ওখানে পড়াশোনা করবে।আর আসবে না দেশে।খুব ব্যাথা পাই সেদিন নিজের কোমল হৃদয়ে। ব্যাথাটা ঠিক সামলে উঠতে পারি নি।
.
কষ্ট গুলো চারপাশ থেকে চেপে ধরে কেবল।বুকের বাঁ পাশে চিনচিনে ব্যাথা অনুভব হয়।প্রচন্ড জ্বালা হয়।আগুন যেন ধাউ ধাউ করে জ্বলছে।চারপাশের কষ্ট গুলো যেন আমায় কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।নিকোটিন ছিল আমার এক মাত্র বন্ধু। খুব কাছের বন্ধু।যখনই চিনচিনে ব্যাথা উঠত ঠিক তখনই নিজেকে নিকোটিনের ধোঁয়ায় আড়াল করে ফেলতাম।রাতে ঠিক মত ঘুম হত না।কত রাত যে জেগে কাটিয়েছি! তার অন্তঃ নেই।
.
দিন যায়! রাত আসে।ঋতু যায়।ঋতু আসে।চাঁদ উঠে।ফুল ফোটে।সূর্য দেখা দেয়।আবার চলেও যায়।ঘন কালো ধোঁয়টে মেঘ গুলো স্বচ্চ পানি রূপে পৃথিবি পৃষ্ঠে পড়ে।ছোট্ট একটা বেঞ্চি।মাঝে মাঝে কড়া রোদে দেখা যায় কেউ একজন সেই বেঞ্চিতে বসে আছে।দাঁড়ি গুলো বড় বড়।চুল গুলো উসকোখুসকো।বিষন্ন হয়ে বসে থাকে সে।কারো সাথে কথা বলে না।চুপচাপ বসে থাকে।কারো জন্যে অপেক্ষা করছে নিশ্চই।অসহনীয় রোদ সহ্য করে সে।মুশলধারয় বৃষ্টিতে ভিজে সে।আনমনা হয়ে থাকে।গা ভিজে যায়।
গায়ের ময়লা গুলো ঝরে যায়।তবে বৃষ্টির সাথে সাথে কষ্ট গুলো মিশে যায় না।গা থেকে ঝরে পড়ে না।ইসস! যদি গা থেকে ময়লার মত কষ্ট গুলোও ঝরে যেত তাহলে কত ভালোই না হত।কারো কষ্ট থাকত না আর।ভালো থাকার অভিনয় করে যারা ভেতরে ভেতরে কষ্ট পাচ্ছে তারাও একটু শান্তি পেত।কষ্ট গুলো তাদের থেকে দূরে সরে যেত।কিন্তু এমনটা হয় না।কখন হবেও না।কষ্ট আছে।কষ্ট থাকবে।কষ্ট কখনও কারো পিছি ছাড়ে না।কখনই না।
.
একটা বছর পেরিয়ে গেল।প্রচন্ড শীত বাইরে।এ দিনেই মিহিনকে দেখেছিলাম আমি। মর্নিং ওয়াক করছে সে।আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম কেবল।আমি বসে আছি।সেই চিরচেনা বেঞ্চিতে।চুপচাপ। ভাবলেশহীন ভাবে।একটা চাদুর গায়ে দিয়ে বসে আছি।ঘন কুয়াশা আমার পছন্দ। কুয়াশা দেখছি।মাঝে মাঝে কুয়াশারর বাতাস বয়ে যায়।আমায় শিহরত করে। আমি একটু মজাও পাই না।চুপচাপ বসে থাকি তবুও।জানি মিহিন আসে নি।আসবেও না।তবুও বসে থাকি।কষ্ট পাই।ভালো লাগে।ঠিক তখনই একটা পারফিউমের ঘ্রান নাকে লাগে আমার।খুব চেনা সেই ঘ্রান।তবুও আমি তাকাই না।চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে থাকি।এটা মনের ভুলও হতে পারে।আমি জানি।মিহিন আসবে না।
:কেমন আছ?
একটা কন্ঠ স্বর ভেসে আসে পাশ থেকে।কেউ বসেছে আমার পাশে।কিছু একটা বলেছে আমায়।খুব চেনা সেই কন্ঠ। হৃদয়ে প্রথম প্রেম শিহরন জেগেছিল এই কন্ঠ শুনে।আমি তাকালাম না তার দিকে।মিহিন এসেছে।কেন এসেছে আমি জানি না।জানতে চাই না।সে তার মত।আমি আমার মত।তবুও বললাম,
:আলহামদুলিল্লাহ্! ভালো আছি।আপনি?
:আপনি? আপনি করে বলছ কেন? খুব অভিমান হয়েছে বুঝি!
:সবার উপর অভিমান করা যায় না।অভিমান করতে অধিকার লাগে। আপনি আমায় সেই অধিকার দেন নি।বাদ দিন।কেন এসেছেন? বিয়ের দাওয়াত দিতে?
মিহিন কিছু বলল না।চুপ করে থাকল।আমিও কিছু বললাম না।ভাবলাম উঠে যাই।ও হয়ত বিরক্ত বোধ করছে। আমি উঠে দাঁড়ালাম।আমাকে দাঁড়াতে দেখেই ও আমার হাত ধরে ফেলল।বলল,
:কোথায় যাচ্ছ?
:আপনার বিরক্তবোধ হচ্ছে মনে হয়।তাই চলে যাচ্ছি।
:চড় খাবা।বেশি বুঝবা না।বস।
:হাত ছাড়ুন।
:আগে বস।তারপর ছাড়ব।
আমি বসলাম।ও তখনও আমার হাত ধরে ছিল।আমি ওর দিকে এখনো তাকাই নি।ও বলল,
:আমার দিকে তাকাও।
আমি তাকাই নি।অন্যদিকে তাকিয়ে থাকলাম।ও আবার বলল,
:কি হল! কথা কানে যায় না?
:আমি কারো কথা শুনতে বাধ্য নই।
:যা বলছি তাই কর।আমাকে রাগাবা না বলে দিলাম।
:আপনাকে রাগালেও কি আর না রাগালেও আমার কি?
:তাসফি! ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
:ভালো মন্দ বুঝার যথেষ্ট বয়স আমার হয়েছে আপু!
এই বার মিহিন আর নিজের রাগকে কন্ট্রল করতে পারে না।আমাকে আবার একটা চড় মারল।চড় মেরেই বলল,
:তোমাকে না বলেছি বেশি কথা বলতে না।এত কথা বল কেন?
আমি সেটা উপেক্ষা করে বললাম,
:হাহ।আপনার কাছে আছেই কেবল চড়।মারুন না।যত ইচ্ছে মারুন। অন্তত অন্তরের ব্যাথাটা তো কমবে।
:প্লিজ তাসফি।প্লিজ! এভাবে বলিও না। আমাকে বলতে দাও।
:কি আর বলবেন।বলুন শুনি!
আমি তখনও ওর দিকে তাকালাম না। ও আমার মাথা ওর দিকে ফিরাল।বলল,
:আমার চোখের দিকে তাকাও।দেখ আমাকে।কতটা কষ্ট পেয়েছি দেখ।
আমি ওর চোখের দিকে তাকালাম।সত্যিই! মেয়েটা অনেক শুকিয়ে গিয়েছে।চোখে নিচে কালি পড়ে আছে।চোখ দুটোয় গল্প ভাসছে।আমার ভালোবাসা গ্রহন না করার গল্প।আমি ওর চোখের দিকে তাকালাম। মায়ার ঘভিরতায় ডুব দিলাম আমি।ও বলল,
:আমরা দুই বোন শুধু।দুজনেরই খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল।সব কিছু শেয়ার করতাম একে অপরকে।একটা ছেলে আপুকে খুব ভালোবাসত। সারাদিন আমাদের বাড়ির আশেপাশে ঘুরাঘুরি করত।একসময় আপুও তার মায়ায় পড়ে যায়।হ্যাঁ বলে দেয়।তুমি জানো আমার আপুর সাথে কি হয়েছে?ওটা আসলে প্রেমিক ছিল না।একটা জানোয়ার ছিল।মানুষ রূপি জানোয়ার।ওই প্রেমিক আর ওর বন্ধুরা মিলে ওকে রেপ করে। বেল্ট দিয়ে আপুকে পিটাইছে ওরা।খুব মারধোর করেছে।মেরে উলঙ্গ করে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে গিয়েছে।একটা দ্রুতগামী ট্রাক আমার আপুকে রাস্তার সাথে মিশিয়ে দিয়ে যায়।এগুলো দেখার পর ছেলেদের প্রতি আমার প্রচন্ড ঘৃনা জেগেছিল।মোট কথা কোন ছেলে কে আমি ঠিক সহ্যই করতে পারতাম না।এরপর তুমি এসেছে আমার জিবনে।তোমায় দেখে বুঝালাম সব ছেলে এক না।তুমি জানো না।আমিও তোমায় ভালোবাসাতে শুরু করে দিয়েছি।তোমাকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু মাঝে মাঝে আপুর কথা মনে পড়লে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারি না।কেমন জানি ভয় করত আমার।যখনই কথাটা মাথায় আসত তখনই নিজেকে আড়াল করে ফেলি।একা একা বসে থাকি।সব অন্ধকার করে বসে থাকি আমি।চার দেওয়া আবদ্ধ হয়ে যাই।আমি যখন বুঝতে পেরেছি যে আমি তোমায় ভালোবাসতে শুরু করেছি তখন থেকেই যতটা ভালোবাসা জন্মেছে তার থেকে বেশি ভয় জন্মেছে হৃদয়ে। যদি তুমি আমার সাথে তেমন কিছু কর যেমনটা আমার আপুর সাথে হয়েছে।ভয় হত।তাই খুব কষ্ট হলেও তোমাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছি।সেটা আমি পারি নি।তোমাকে চড় মেরে আমিও খুব ভালো ছিলাম না তাসফি।প্রতি রাতে কষ্ট নিয়ে বিছানায় গিয়েছি।ঘুম আসে নি।শুয়েছিলাম কেবল।তোমায় প্রচন্ড মিস করেছিলাম আমি।এরপর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারি নি।ছুটে চলে এলাম।তোমার কাছে।তোমার বুকে মাথা রাখব বলে।আমি তোমায় ভালোবাসি তাসফি। খুব খুব ভালোবাসি।
আমি এতক্ষণ মিহিনের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম।ওর চোখ বলে দিচ্ছে ও আমায় ভালোবাসে।আমার জন্যে না খেয়ে ছিল। কষ্টে ছিল ও।একদমই ভালো ছিল না ও।আমি ওর দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।ও ছলছল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল কেবল।বলল,
:এখনো অভিমান করে থাকবে?
:আমি কারো উপর অভিমান করি নি।অভিমান করতে অধিকার লাগে।কেউ আমায় সেই অধিকার দেয় নি।
মিহিন আস্তে করে তাসফির ডান হাতটা নিজের হাতের ভাঁজে দিল।বলল,
:সে তো কবেই দিয়ে রেখেছি।আজ আবারো দিলাম।
আমি কিছু বললাম না।কেবল ছলছল চোখে ওর দিকে তাকালাম।আমার সকল রাগ অভিমান যেন পানি হয়ে গেল।ওর চোখেও জল জমে আছে।ছলছল করছে।একটু পরেই গড়িয়ে পড়বে।মিহিন আর একটুও অপেক্ষা করল না।আমাকে খুব জোরে জড়িয়ে ধরল।বলল,
:পাগল! তোমায় খুব বেশি ভালোবেসে ফেলেছি আমি।
:আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতামই না মিহিন।
দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে থাকল।ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হল ওরা।একটু পর লোকজন আসবে এখানে। খুব কোলাহল হবে
মিহিনের কোলাহল একদমই পছন্দ না।কিছু সময় পর এই জুড়িকে খুঁজেও পাওয়া যাবে না।হয়ত তারা বিয়েও করে ফেলতে পারে।আবার হয়ত তারা প্রেম বিলাশে ব্যস্তও হয়ে পড়বে।তিনটা চড় খেয়েছে তাসফি। তার পরবর্তিতে কত গুলো মিষ্টি কোমল ঠোটের ছোঁয়া পাবে তার অন্তঃ নেই।আপনি হুদাই এই গল্পটা পড়লেন।লাভ কি হল।আরে মিঞা মিষ্টি পাবে তাসফি সাহেব।এখানে আপনার লাভ কি বলুন তো।খমখা টাইমটা লস করলেন।যাই হোক।গল্প শেষ,বাংলাদেশ।
.
ভুলত্রুটি মার্জনীয়
-তাসফি আহমেদ