Bangla Golpo: দিন চলে যায় | লেখক তাসফি আহমেদ

বাংলা গল্প| Bangla Love Stories| Bangla Choto Golpo | Bangla Valobashar Golpo| Bangla Golpo.

Bangla Golpo: দিন চলে যায়

লেখকঃ তাসফি আহমেদ।
তমার মনে হলো কেউ তাকে দেখছে। লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে। তার কেমন জানি অস্বস্তি হতে থাকলো। কেউ তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলে তার এমন অস্বস্তি হয়। কেমন একটা অনুভূতি হয়। হঠাৎই  তার চোখ পড়লো রাকিবের ঘরের জানালার উপর। ঠিক তখনই তার মনে হলো জানালার কাছ থেকে কেউ সরে গিয়েছে৷ তমা কিছু সময় তাকিয়ে থাকলো সেদিকে। তারপর চোখ নামিয়ে নিলো। একটা ভারী দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো তার গলা দিয়ে। কেমন একটা গা গুলিয়ে উঠা অস্বস্তি হলো তার। কেউ তাকে আড়াল থেকে দেখে যাচ্ছে। অথচ  সে কিছুই করতে পারছে না৷ একদিকে তার স্বামীর দেওয়া আঘাত এবং সাংসারিক পরিশ্রম অন্যদিকে তার দেবরের লোলুপ দৃষ্টি; এসব যেন তাকে ভীষণ ভোগাচ্ছে। কষ্ট দিচ্ছে৷ তার মাঝে কেমন উন্মাদনার সৃষ্টি করছে। এসব আর সহ্য হয় না তার। ঘৃণায় থুতু ফেলতেও ইচ্ছে হয় না। আর ভালো লাগছে না। এই জগত সংসার তার কাছে বড়ই অসহ্যের লাগে এখন। এখানে সুখ নেই। বেদনায় আচ্ছন্ন চারপাশের দেয়াল। ভালোবাসার বড়ই অভাব।
.
তমাকে অবশ্য বিয়ের কয়েকদিন পরেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে তার দেবরের চরিত্রে দোষ আছে। তার ঘরের দিকে যেন না যায় সে৷ যতটুকু সম্ভব নিজেকে যেন আড়াল করে রাখে৷ তমা নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করেছিল৷ কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি। যে মেয়েকে রোজ গরু-ছাগল চরাতে বের হতে হয় তার দ্বারা নিজেকে আড়াল করা কীভাবে সম্ভব তা তমা আজ পর্যন্ত বুঝে উঠলো না৷ মাঝে মাঝে তার ইচ্ছে হয়, তার শাশুড়িকে একবার জিজ্ঞেস করতে, "এভাবে কীভাবে নিজেকে আড়াল করা সম্ভব?" কিন্তু সে কেন জানি তা পারে না। বলার একটা অদম্য ইচ্ছে ছিল এক সময়৷ এখন কেন জানি তার সকল ইচ্ছে মরে গিয়েছে৷ অনুভূতিরা মৃত্যুবরণ করেছে। এখন কেবল বিতৃষ্ণা অনুভব হয়। মুক্তি পেতে চায় মন। ত্যাগ করতে চায় এমন সকল বেদনা-দুঃখ।
.
তার দেবরের নাম রাকিব হোসেন৷ রাকিব তমাদের সাথে থাকে না৷ তার নিজস্ব ঘর আছে৷ সে একা থাকে৷ তাদের সম্পত্তির ভাগ হয়ে গিয়েছে। রাকিবের সাথে তার মায়েরও কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের মাঝে পারিবারি দ্বন্দ্ব চলছে৷ তার মা থাকেন তমাদের সাথে৷ তমা সম্পর্কে রাকিবের বড় ভাবী হবে। বড় ভাবী মায়ের সমান৷ সেখানে সে লুকিয়ে লুকিয়ে তার বড় ভাবীকে দেখছে৷ যার দ্বারা বোঝাই যায় তার চরিত্র কতোটা নিম্নমানের।
.
সে একজন রাজনীতিবিদ। রাজনীতির সুবাদে প্রায়ই নানান ছেলেপুলে দেখা যায় তার ঘরে৷ প্রায়ই ঘর ভর্তি মানুষ হয়৷ অনেক হাসি-তামাশার আওয়াজ পাওয়া যায়৷ মারাত্মক মারাত্মক গালির শব্দ ভেসে আসে৷ ঘরটা যে নষ্ট ঘর তা বেশ বোঝা যায়৷ মাঝে মাঝে কোত্থেকে জানি মেয়েছেলে এনে রাখে ঘরে। রাতে ফুল ভলিউমে মিউজিকের শব্দ শোনা যায় তার ঘর থেকে৷ ভেতরে কি হয় কে জানে৷ সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজেই মেয়েটাকে পৌঁছে দিয়ে আসে। তখন তাকে দেখলে মনে হয় না যে একটা অপরিচিত মেয়েকে এভাবে রাতে নিজের কাছে রাখাটা বিশেষ কোনো অপরাধ৷ তাও আবার একটা সুশীল গ্রামে৷ সে বেশ আনন্দ চিত্তেই থাকে। স্বাভাবিক ভাবে মেয়েদের আনে, আবার ফিরিয়ে দিয়ে আসে৷ এ ব্যাপারে গ্রামের লোকজন তাকে অনেক নিষেধ করেছে৷ সমাজ সম্পর্কে জ্ঞান দিয়েছে৷ আল্লাহর ভয় ঢুকিয়েছে৷ সে সব কিছু যে তার মাঝে কোনো রূপ প্রাভাব ফেলেনি তা স্পষ্টই বোঝা যায়৷ সে নিজের মতোন চলতে থাকে৷ কাউকে সে তেমন পাত্তা দেয় না৷
.
তমা বারান্দায় বসে আছে৷ খোলা বারান্দা। রাকিবের সম্পর্কেই ভাবছিল এতোক্ষন৷ রাকিব ছেলেটা তমাকে প্রথম থেকেই লক্ষ্য করে যাচ্ছে৷ এখনও করছে৷ কেউ ছুঁয়ে ধর্ষণ করে। আবার কেউ না ছুঁয়েই৷ তমার মনে হয় রাকিব না ছোঁয়াদের দলে। এদের ছোঁয়ার প্রয়োজন পড়ে না৷ এরা দেখে দেখেই ধর্ষণ করে৷ তাকিয়ে থেকে সামনের মানুষটাকে চোখের পর্দায় উলঙ্গ করে ফেলে৷ তারপর নানান কিছু ভাবে৷ কথাটা ভাবতেই গা গুলিয়ে উঠল তমার৷ এক দলা ঘৃণা এসে তার গলার কাছে আঁটকে গেল৷ নিজেকে বড়ই অসহায় লাগলো তার৷ কেমন জানি ভোগের বস্তুর মতো৷ আচ্ছা রাস্তার বেশ্যা গুলোর কি এমন মনে হয়? নিজেকে ভোগের বস্তু ভাবে?
.
আশ্চর্য! তমা এসব ভাবছে কেন? আজ হঠাৎ তার এমন লাগছে কেন? কেমন অসাড় অসাড় ভাব৷ মস্তিষ্ক যেন কাজ করছে না৷ সকল বিদ্যাবুদ্ধির যেন লোপ ঘটেছে। আজ রাতেই কাজটা করে ফেললে কেমন হয়? খামখা অপেক্ষা করে নিজের কষ্ট বাড়ানোর কোনো মানেই সে পেল না৷ সে মনে মনে স্থির করলো কাজটা সে আজই করবে৷ এসব আর ভালো লাগে না তার৷ একেবারে সব কিছুর শেষ হয়ে যাওয়াই ভালো। একটা পরিণতির বিশেষ প্রয়োজন। পরক্ষনে বৃষ্টি আর সুমনের কথা মনে পড়ে গেল। বৃষ্টি তার বড় মেয়ে। এর ছোট সুমন৷ দু'জনকে নিয়েই তার নানান স্বপ্ন ছিল। এই ঘর-সংসারের ভাজে পড়ে তার সেই সব স্বপ্ন গুলো মেঘেদের মতো দূরে কোথাও উড়ে যায়৷ এখন আর সে সব মনে পড়ে না তার। ছেলেমেয়ে দুটোর জন্যেও তেমন টান অনুভব করে না৷ তার এই মূহুর্তে মনে হলো সময়টা আসলেই চলে এসেছে৷ কাজটা আজই করতে হবে৷  আজ রাতেই।
.
তমার চেহারা বেশ ভালো ছিল৷ ভীষণ উদ্যোমী এবং আত্মবিশ্বাসী একটা মেয়ে৷ বড়লোক ঘরে জন্মালে এই মেয়ে একদিন পৃথিবীর উপকারে আসতো৷ কিন্তু কপালের দোষ তার, জন্মালো দরিদ্র অনাহারে থাকা এক পরিবারে৷ যে পরিবারে তিন বেলা খাবার পাওয়াটাই আনন্দের৷ এরচে বাড়তি কিছু এদের চাহিদায় নেই৷ থাকলেও তা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা বড়ই ক্ষীণ। তমার বাবার নাম রমিজ আলি। তিনি চায়ের দোকান দেন৷ বড় রাস্তার মোড়ে তার দোকান৷ দোকান তেমন বিশেষ চলে না৷ গ্রামের মানুষেরা দোকানে চা খাওয়ার মতো বিলাসিতা তেমন করে না৷ তবুও তাঁর কিছু আয় হয়৷ তবে এলাকার ছেলেপুলেরা হদ্দমে বাকি না খেলে তার সংসারটা খানিক ভালো চলতো৷ বাকি খাওয়ার পর টাকা দেওয়ার কথা মনে থাকে না অনেকেরই৷ দোকানটা বাজারে হলে বেশ লাভ হতো তাঁর৷ কিন্তু টাকার অভাবে বাজারে দোকান নেওয়া হয় না৷ একটা দোকান নেওয়ার কথা অবশ্য ভাবছিলেন রমিজ আলি। তাঁর একটা ধানি জমি আছে৷ সেটা বিক্রি করেই দোকান নেওয়ার পরিকল্পনা। ঠিক এমন সময়ে তাঁর বড় মেয়ে তমার বিয়ের জন্যে দেখতে এলো৷ পাত্র আগে বিদেশ থাকতো। এখন গ্রামে আছে। গরু ছাগল লালন-পালন করে। তার দশটা গরু আছে এবং প্রায় বিশটার মতো ছাগল। ছেলের বংশ অত্যন্ত উত্তম। ভূঁইয়া বংশ। চেহারাও মাশাল্লাহ দেখার মতো৷ যে কারোই পছন্দ হবে৷ রমিজ আলি বিনাবক্যে ছেলেদের বাড়ি দেখতে রাজি হয়ে গেলেন৷ তিনি তাঁর মেয়েকে সুখে দেখতে চান। তাঁর মনে হলো এরচে সুখে তমা অন্য কোথাও থাকতে পারবে না৷

তমা বিয়ে করতে রাজি হলো না৷ তাকে জোর করা হলো। তখন সবে সে ইন্টার প্রথম বর্ষে৷ দশম প্রেণিতে তার রেজাল্ট বেশ ভালো হয়েছে৷ মানবিক শাখার ছাত্রী সে৷ স্কুলে চতুর্থ হাইয়েস্ট মার্ক্স তার৷ ইন্টারটা ভালো মতো শেষ করে এই মেয়েটা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন দেখছিল। হয়তো সে সাথে বড় হয়ে চাকরি করে বাবার দুঃখ-কষ্ট দূর করার একটি অঙ্কুরিত স্বপ্ন ছিল তার৷ সেই স্বপ্নটা বিয়ে নামক জটিলতার আড়ালে হারিয়ে ফেলে সে৷ সব যেন ধীরে ধীরে গুলিয়ে যায়।

তমা গান জানতো। সে ভেবেছে মাঝে মাঝে স্বামী মহাশয়কে গান শুনিয়ে মুগ্ধ করবে৷ বৃষ্টির রাতে বারান্দায় বসে দু একটা কবিতাও শুনিয়ে ফেলবে৷ তার স্বামী মুগ্ধ হয়ে দেখবে তাকে। তার স্বরের প্রশংসা করবে৷ কোমল আলো দেওয়া চাঁদকে তুচ্ছ করে বলবে, "তমা, তুমি চাঁদের চেয়ে অতি সুন্দরী। চাঁদের আলোর চেয়ে তোমার চেহারার দ্যুতিটা আমায় বেশ প্রভাবিত করে৷" এই শুনে চোখে পানি নিয়ে আসবে তমা৷ মাঝে মাঝে মানুষটা ছুঁয়ে দিবে তমার গাল। মুখের সামনে চলে আসা অবাধ্য চুল গুলো কানের কাছে গুঁজে দিবে৷ তমা মনে মনে কল্পনা করে ঠিক সেই মূহুর্তে সে কেঁপে উঠবে। স্বামী নামক অচেনা মানুষটির প্রতিটি ছোঁয়ায় সে কাঁপবে। নতুন নতুন অনুভূতি জন্মাবে। সেই অনুভূতি গড়াবে প্রেম রাজ্যের দিকে। মেয়েটার বয়সটাই হয়তো তেমন ছিল। নানান রঙিন স্বপ্নে ভরপুর ছিল তার জীবন৷ আর যাই হোক, পৃথিবী উল্টে গেলেও বই পড়া ছাড়বে না সে; এমন একটি প্রতিজ্ঞায় সে আঁকড়ে ছিল। কিন্তু বিয়ের পর সেসব স্বপ্ন, প্রতিজ্ঞা কোথায় যেন হারিয়ে গেল। মিইয়ে গেল একদম। স্বচ্ছ পানিটা ঘোলাটে হয়ে গেল৷ সেই ঘোলাটে ভাবটা আর গেল না৷ তার স্পষ্ট সুন্দর জীবনটা ঘোলাটে হয়ে গিয়েছে। হয়তো আজীবনই এমন থেকে যাবে৷

বিয়ের প্রথম ক'দিন তার ভালোই কেটেছে৷ কিন্তু দিন যেতে যেতেই যেন সে মানুষ চিনতে শুরু করে। পরিবেশ বুঝতে পারে। সে এও বুঝতে পারে এসব তার জন্যে নয়৷ এই সংসার তার নয়৷ এখানে তার বাঁচাটাই দায়৷ দায় বলেও সে ছয়টি বছর কাটিয়ে দিয়েছে এই সংসার কারাগারে।

বিয়ের পরের দিন থেকে তাকে সকাল সকাল বাড়ির উঠোন ঝাড়ু দিতে হয়৷ চুলায় আগুন দিতে হয়৷ যাতে মানুষ দেখে এটা বলে যে, বউ হিসেবে তারা খাঁটি সোনা পেয়েছে। প্রথম প্রথম এই কাজ গুলো বেশ আনন্দে সাথেই করেছে তমা। তার মা-ই তাকে শিখিয়ে দিয়েছে এসব করতে৷ কিন্তু দিন যেতে যেতেই সবই কেমন জানি  অসহ্য লেগে উঠে তার৷ তার মনে হয় এখানে ভালোবাসা নেই৷ একদমই নেই৷ এই সংসারে ঘুম থেকে উঠেই কাজ এবং কাজ৷ কষ্ট করে দুপুর বেলায় খাওয়াটা খাওয়া৷ এরপরেই সন্ধ্যা পর্যন্ত গাধার মতো খাটতে হয়৷ তমা তো অবাক হয়েছিল যখন তাকে প্রথম বলা হয়েছিল যে গরু গুলো নিয়ে মাঠের দিকে যেতে। তার অবাকের সীমা রইলো না। ঘরের বউ কী করে মাঠে কাজ করতে যাবে? সে তখনই স্পষ্ট নিষেধ করে দিয়েছিল৷ কঠিন করে বলেছে, "সে এসব করতে পারবে না৷" সেদিন তার স্বামী তার দিকে তাকিয়ে ছিল কিছু সময়। কিছু বলেনি আর। এরপর তমাকে আবারও একই কাজের জন্যে বলা হয়৷ এবার কাজের সুপারিশ নিয়ে আসে তমার শাশুড়ি। তমা রুক্ষ স্বরে বলে,
-আমি এসব কাম করতে পারুম না আম্মা।
তমার শাশুড়ি রেহানা বেগম কোমল স্বরে বলেন,
-হুনো মা, এই সংসারে আমিও একদিন বউ হইয়া আইছিলাম৷ এসব কাম আমিও করতে চাইছিলাম না। কিন্তু কী করমু কও? খাওন লাগবো তো। এসব না করলে খাইবা কী হু? তোয়াঁর স্বামী তো এসব একলা একলা সামাল দিতো পারবো না৷ আগে আমি যাইতাম। এহন বুড়া হইয়া গেছি। শইল্যে বল পাই না। হের লাইগ্যা যাইতে পারি না।
তমা স্পষ্ট জবাব দিলো,
-এর লাইগ্যা আমারে যাইতে হইবে ক্যান? আফনেরা লোক লইয়া করাইতে পারেন না?
তমার শাশুড়ি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন তার দিকে। তাঁর চেহারা কেমন কঠিন হয়ে আসছিল। তিনি কিছুটা কঠিন স্বরে বললেন,
-লোক রাইখতে ট্যাকা লাগে৷ হেই ট্যাকা কি তোঁয়ার বাপ দিবো?
তমা জবাব দিলো না। সে কী বলবে ভেবে পাচ্ছিল না। তার শাশুড়ি আবার বললেন,
-খাইতে হইলে কাম করতে হইবে। যা কইছি হুনো। পোলার লগে গরু লইয়া যাও।
তমা চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। তার যেতে ইচ্ছে করছে না। খুব অসহ্য লাগছে৷ এসব কাজ একদমই করতে ইচ্ছে করছে না৷ ঠিক সেই মূহুর্তে মহীন ঘরে ঢুকলো৷ তার চেহারা কেমন রক্তিম হয়ে আছে। সে যেন এই ঘরের সমস্ত আলাপ শুনেছে। তাই তার রাগ হচ্ছে। সে এসে বেশ কড়া স্বরে বলল,
"এই, চল। আমার লগে আয়৷"
তমা যেন বিরক্ত হয়৷ মুখ কুচকে বলে,
"উফ! আফনেরে কইছি না আমি যামু না৷ আমার এইসব ভালা লাগে না৷"
তরুণী তমা। তার স্বরটাও স্পষ্ট। মহীনের স্বর আরো কঠিন হয় এতে। বলে,
"হারামজাদি, যাইবি না মানি? তোরে এহনই যাইতে হইবে৷ গরু না চরাইলে হেরা খাইবো কী? হেরা না খাইলে আমরা দুধ পামু কই থেইক্কা?"
"আফনে যান। আমি যাইতে পারমু না৷ এইসবে আমার ঘিন(ঘৃণা) লাগে৷"
"শালির ঘরের শালি, ঘিন আবার কী রে?"
এই বলেই কষিয়ে চড় দেওয়া হয় তমার গালে। মেয়েটি তাল সামলাতে না পেরে মেঝেতে পড়ে যায়৷ তার স্বামী রক্ত চক্ষু নিয়ে কঠিন স্বরে বলে,
"জলদি কইরা উঠ মা*। আমার লগে আয়৷ না আইলে তোর খবর খারাপ হইবে কিন্তু কইয়া দিলাম।"
তমার গালে পাঁচ আঙ্গুলের ছাপ। ব্যাথা ঝরে তার চোখের কোণা বেয়ে৷ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সে৷ মহীন এগিয়ে এসে চুলে মুঠি টেনে ধরে তমার। নানান রকম গালি দেয়। তমার চিৎকার দিয়ে কান্না করতে ইচ্ছে হয়। অথচ চিৎকার আসে না ভেতর থেকে৷ স্বামীর হাতে একদিন মার খেতে হবে সেটা যেন তার ভাবনায়ও ছিল না। যেখানে সে গান-কবিতা নিয়ে স্বামীর স্বপ্ন দেখেছিল সেখানে তাকে স্বামীর হতে মার খেতে হচ্ছে! সে স্তব্ধ হয়ে মেঝেতে পড়ে থাকে। চোখ কোনো শব্দ ছাড়াই নিজের জল ত্যাগ করে। এরচে তার বাবার দরিদ্র ঘরটাই তো বেশ ছিল। সেখানে অন্তত ভালোবাসা ছিল। স্নেহ মমতা ছিল। এখানে সেসব বিন্দুমাত্রও নেই। তমাকে উঠে দাঁড়াতে হয়। বাধ্য মেয়ের মতো যেতে হয় গরুর ঘরের দিকে৷ যেতে হয় ছাগলের ঘরে। ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে তার নিত্য রুটিন এটি। হাঁস-মোরগেরও অভাব নেই। সেদিকে তার নজর রাখতে হয়৷ সকাল সকাল এসব করে তাকে আবার জলদি করে নাস্তা তৈরী করতে হয়৷ নাস্তা না পেয়ে চিৎকার আসে তার স্বামীর। তার শাশুড়ির। সাথে কিছু অকথ্য গালি। কে জানে তমার শ্বশুর সাহেব থাকলে হয়তো তিনিই একই কাজ করতেন। ভাগ্য সুপ্রসন্ন যে তিনি নেই৷ নিজের তৃতীয় স্ত্রীর সাথে বরিশাল আছে নাকি। এ পক্ষের খবরও নেন না৷

সকাল বেলার নাস্তার পরে আসে ঘরের কাজ। এরপর দুপুর ও রাতের রান্না৷ মাঝে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে চুলায় রান্না রেখে দৌড়ে যেতে হয় মাঠে৷ বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডা লেগে যায় ছাগলের। একবার দুটো ছাগল এক সাথে মারা গিয়েছে৷ মহীনের ধারণা ছাগল গুলো ঠান্ডা লেগে মারা গিয়েছে। এদের নাকি নিউমোনিয়া হয়ে গিয়েছিল। তাই মহীনের কথা মতো বৃষ্টি এলেই দৌড়ে যেতে হবে৷ যেখানেই থাকুক যেতে হবে। না গেলে তার নির্মম অত্যাচার থেকে রেহাই পাবার উপক্রম নেই৷ যদিও প্রায় সময় মহীন বাসায় থাকে এবং সে নিজেই যায়। তবে যেদিন মহীন বাসায় থাকে না সেদিন খানিকটা সমস্যায় পড়তে হয়।

সেদিন মহীন বাসায় ছিল না৷ তমা রান্নাঘরে তরকারি রান্না করছিল। অল্প বয়সে মেয়েটি রান্না শিখে গিয়েছিল। এই রান্না শিখে নেওয়াটা যে কতোটা উপকার করেছে তা বলে বোঝানো সম্ভব না৷ একমাত্র এই রান্না দিয়ে সে মাঝে মধ্যে স্বামীর গলায় নিজের প্রশংসা পায়৷ যদিও এই প্রশংসার রেশ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। যাই হোক, তরকারি রান্নার এক পর্যায়ে আকাশ কালো হয়ে এলো। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই যেন মেঘ চলে আসবে৷ মেঘ আসতে দেরি করলো না৷ তমা চুলায় ডাল আর তরকারি রেখে দৌড়ে গেল মাঠে। ততদিনে তার এসব অভ্যাস হয়ে গিয়েছে৷ দৌড়ের চোটে যে বুকের ওড়না সরে যায়, ওড়না হীন উঁচু বুকটার দিকে যে আশপাশের অনেকেই তাকিয়ে থাকে, সে সব মাথায় থাকে না তার। তার লক্ষ্য থাকে যতো দ্রুত সম্ভব ছাগলকে ঘরে নিয়ে আসা৷ তা না হলে স্বামীর অকথ্য গালি কিংবা চড় থাপ্পড় সে ঠিক সয়ে নিতে পারে না। তাই মান সম্মানের মাথা খেয়ে দৌড়ে যেতে হয়৷ ছাগল নিয়ে ফিরে এলেও মেয়েটার জন্যে সেদিন খুব বাজে কিছু অপেক্ষা করছিল। চুলায় থাকা তরকারি আর ডাল সে বাজে কিছুর মূল। রেখে যাওয়া তরকারির তলা শুকিয়ে গিয়েছিল। পুড়ে গিয়েছে। ডাল অতিরিক্ত বুদবুদের কারণে পাতিলের কাছ দিয়ে অনায়াসে পড়ে গিয়েছে৷ তার শাশুড়ি রান্না ঘরে ঢোকেন না৷ শুয়ে বসে খান৷

সেই রান্না করা তরকারি যখন মহীনের পাতে আসে, তখন দিনভর পরিশ্রম করা মহীন যেন তেলেবেগুনে চেঁতে যায়৷ এতো পরিশ্রম করেও যদি দুপুর বেলা খাওয়া ভালো না হয় তাহলে কার মেজাজ ঠিক থাকে? মহীন পাতের থালা জোরে ছুড়ে মারে তমা দিকে। চিৎকার দিয়ে বলে,
"কুত্তার***, এইসব কি রানছোস তুই? এই *লের রাঁন্ধা খাইতে এতো কষ্ট করি পুরা দিন?"
তমার নিরিহ জবাব,
"ছাগলে আনতে যাইয়া..."
"কথা কইবি না খা**"
অত্যন্ত অকথ্য ভাষায় গালি চলে তখন। এক সময় রেগে গিয়ে হাত উঠে মহীনের৷ সে বেলা মার খেয়েই পার হয় তমার৷

এসবের পরে যখন ক্লান্ত দেহ টেনে বাইরে খোলা বারান্দা কিংবা সিড়িতে বসে ঠান্ডা বাতাসের অপেক্ষা করে তমা, তখন রাকিবের ঘরের জানালা দিয়ে দু'চোখ ভীষণ আগ্রহে তাকিয়ে থাকে৷ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে এ অঙ্গ সে অঙ্গ৷ তমার তাইই অনুমান। কারণ দু'মিনিট বাইরে বের হলেই তমার মনে হয় তাকে কেউ দেখে৷ কেবল দেখে না৷ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে৷ এসব ব্যাপারে তমা তার মায়ের সাথে আলাপ করতো না৷ তবে স্বামীর কাছে মার খাওয়ার ব্যাপারে প্রথম প্রথম নালিশ হয়৷ এই নিয়ে দু'পক্ষের বিচার বসে। মহীন হাত জোড়ো করে ক্ষমা চায়৷ কিন্তু ভোর হলেই মহীন যেন সেসব ভুলে যায়৷ শুরু হয় তার পাষবিক আচরণ।  এখন অবশ্য এসব নালিশ ফালিশ আর হয় না৷ তমার বাবার সাথে প্রায় অনেকদিন যোগাযোগ নেই। তিনিও কেন জানি আসেন না৷ মেয়ের মুখোমুখি হোন না। তমাও আর আগ্রহ পায় না বলার। সব গা সয়ে গেছে৷ সে এই বন্য সংসারের সাথে মিশে গিয়েছে৷ এখন চাইলেও ছুটে যাওয়া যায় না। সেই বয়স আর নেই৷ তার এখন দু'বাচ্চা। বাচ্চাদের কথা মনে পড়তেই তমা ভাবে বৃষ্টির জন্মদিনের কথা৷ তার প্রথম সন্তান যে মেয়ে হবে সেটা জানার পর তার শাশুড়ি আর স্বামী যেসব অত্যাচার করেছে সেসব ভাবলেও যেন ভয় লাগে তার৷ ঠিক মতো খাওয়ার সুযোগও হতো না৷ ভারী পেট নিয়ে মাঠেও যেতে হয়েছে দু'একবার৷ এসব ভেবে ভেবে রাতের আঁধারে তমা এক সময় প্রচণ্ড কেঁদেছিল। এখন আর কাঁদে না৷ কান্না আসে না৷ চোখের জল ফুরিয়ে গিয়েছে৷ তার সমস্ত উদ্যোম পানি হয়ে গিয়েছে৷ তার আত্মবিশ্বাস ভেঙ্গে চুরমার। এখন সব ফিকে লাগে তার কাছে৷
.
"এই কইরে?"
তমা খানিকটা চমকে উঠে। বারান্দায় বসে থেকে ভাবনায় হারিয়ে গিয়েছিল মেয়েটা৷ স্বামীর কর্কশ কণ্ঠে ধ্যান ভাঙ্গে তার৷ ক্লান্ত দেহ টেনে উঠে দাঁড়ায়৷ স্বামীর রুমের দিকে যায়। গিয়ে দেখে মহীন খালি গায়ে বিছানায় শুয়ে আছে৷ কেমন ঘোর ধরা দৃষ্টিতে দেখছে তমাকে। যেন প্রচণ্ড নেশা সেখানে। রাজ্যের কামনা সেখানে। সে বলে,
"আয় আয়! জলদি আয়৷"
তমা ভেবেছিল সব কিছু শেষে সে স্বামীর কাছে একটা সুন্দর রাত উপহার পাবে৷ যে রাতে তারা গল্প করবে। গান গাইবে৷ কবিতা আবৃত্তি করবে৷ অথচ সে সব কিছুই হয় না৷ মহীন নিজের শরীরের চাহিদাটা মিটিয়েই ঘুমিয়ে পড়ে৷ যেন এই ঘরে তমার কেবল এই একটাই বিশেষ প্রয়োজন৷ নিজের শরীরটাকে বিলিয়ে দেয়া৷ স্বামীকে ভোগ করতে দেওয়া৷ এই স্বামী স্ত্রীর শরীরের কোনো অসুখ কিংবা নিয়ম কানুন মানে না৷ সে যখন মন চাইবে এসে নিজের চাহিদাটা মিটিয়ে চলে যাবে৷ তার আর কিছুই চাই না। কিংবা তমা কী চায় তারও কোনো গুরুত্ব নেই তার কাছে৷ তমা এগিয়ে গেল। আরেকবার নিজেকে বিলিয়ে দিতে গেল সে৷ মাঝে মাঝে তার মনে হয়, তার সৃষ্টিই হয়েছে স্বামীর ভোগের জন্যে এবং দেবর সাহেবের চোখের শ্রান্তির জন্যে৷ এসব নিয়ে আজকাল বাঁচাটা বড় দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ আর সয়ে নেওয়া যায় না যেন৷ সময় তাহলে চলেই এসেছে৷
.
রাত তখন দুটো বেজে গিয়েছে৷ তমা মহীনের ঘর থেকে ফিরে পুকুরে নেমে যায়৷ গায়ের কাপড়টি খুলে ফেলে। নিজেকে নিরাবরণ করে অন্ধকারে পানিতে ভাসে৷ তার বড় আনন্দ লাগে তখন৷ ভালো করে সমস্ত শরীরে সাবান মাখে। বেশ সময় নিয়ে গোসল করে৷ ভেজা চুল নিয়ে উঠে আসে পাড়ে৷ নিঃশব্দের নিজের রুমে ঢুকে। ভ্যানিটিব্যাগ, দুটি শাড়ি আর ছোট্ট একটি বক্স নিয়ে বেরিয়ে আসে। ধীর পাঁয়ে ঢুকে রান্নাঘরটায়। বাতি জ্বালায়। তোয়ালে দিয়ে চুল ঝারে৷ নতুন শাড়িটি পরে নেয় বেশ যত্ন করে। অনেক সময় নিয়ে শাড়ি পরে সে। ছোট্ট বক্সটা থেকে কিছু সাজার জিনিসপত্র বের করে। ছোট্ট একটা আয়না বের করে। কপালে টিপ দেয়। প্রায় অনেক বছর পর চোখে কাজল পরে৷ খুব ধীরে, ভীষণ যত্নে সে চোখে কাজল মাখে৷ কাজল কালো মায়া। আয়নাটায় নিজেকে দেখে সে৷ মৃদু হাসে৷ অসুস্থ হাসি। নিজেকে তার বড়ই সুন্দরী মনে হয়৷ এক মূহুর্তের জন্যে তার মনে হয় সে পৃথিবীর সেরা সুন্দরীদের একজন! আসলেই কি তাই? সে লজ্জা পায়৷ লজ্জা পেলে এই মেয়েটার চেহারায় লাল আভা আসে৷ এখনও এলো। তার চেহারা লাল হয়ে এলো। তাকে আরো সুন্দর দেখালো। নিজেকে প্রেমিকা প্রেমিকা মনে হলো তার৷ কারো জন্যে এমন করে সাজবার ভীষণ সখ ছিল। সেই সখ আজ কোথায় গেল কে জানে! তমা আপন মনেই বলে উঠল,
"সময় এসে গেছে রে তমু৷ সময় এসে গেছে তোর৷"
সে আবারও মৃদু শব্দ করে হাসে৷ অনেক দিন পর হাসে৷ শান্তির হাসি৷ সে অন্য শাড়িটা হাতে নিলো৷ একটা জল চৌকি ছিল রান্না ঘরে। সেটাতে উঠে দাঁড়ালো৷ পাঁ উচিয়ে কাঁপাকাঁপা হাতে শাড়িটা বাঁধলো রান্নাঘরের সিলিং এর সাথে৷ একটা ভারী দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো তার গলা দিয়ে৷ সময় আসলেই চলে এসেছে৷ আজকেই সেই সময়।
.
মহীনের ঘুম ভাঙ্গল সকাল আটটা বাজে৷ তমা তার পাশে নেই৷ সে উঠে বারান্দায় দাঁড়ালো৷ চায়ের পিপাসা পেয়েছে তার৷ তমাকে ডাকলো সে৷ একবার, দুবার করে বেশ কয়েকবার৷ তমার সাড়া পাওয়া গেল না৷ রাগ উঠলো তার। জোরে জোরে ডাকতে শুরু করলো৷ তমা জবাব দিচ্ছে না৷ কয়েকটা গালি বেরিয়ে এলো মহীনের গলা দিয়ে৷ তাও কোনো সাড়া নেজ। কোথাও তমা নেই৷ নেইই সে৷ মহীন চিৎকার চেঁচামেচি করে পুকুর পাড়ের দিকে গেল৷ সকাল বেলা মেয়েটা থালাবাসন ধুতে যায় পুকুরে৷ সেখানে থাকতে পারে৷ তমা সেখানেও নেই৷ মহীনের রাগের মাত্রা আরো কিছু বৃদ্ধি পেলো। সে রান্নাঘরের দিকে পাঁ বাড়ালো। গিয়ে দেখলো রান্নাঘরের দরজাটা খোলা। অবাক কান্ড! মেয়েটা রান্নাঘরে থেকেও কোনো সাড়া দিলো না? কতো বড় সাহস তার! সে  দ্রুত ভেতরে ঢুকলো৷ দেখলো  তমা বসে আছে৷ রুটি বানাচ্ছে। রাগে তার শরীর ফেটে যাচ্ছে যেন৷ সে বেশ কঠিন স্বরে বলল,
-এই? তোরে যে ডাকতেছি হুনোস না? কান গেছে নাকি?
তমা জবাব দিলো না৷ মহীন আবারো চওড়া স্বরে বলল,
-কিরে? কথা কস না ক্যান?
তমা চুলায় আগুন দিতে দিতে বলল,
-মুখ ধুইয়া আহেন। নাস্তা দিতাছি৷
মহীন কিছু সময় রক্ত চক্ষু নিয়ে তাকিয়ে থাকলো তমার দিকে৷ তারপর বেরিয়ে গেল ঘর থেকে। কিছু বলল না। তমা নিজের মতোই থাকলো। মহীনের রাগের প্রভাব এই মূহুর্তে না পাওয়া গেলেও আজ যেকোনো সময়ই সে এই প্রভাবটুকু পাবে৷ তমা এই ব্যাপারে নিশ্চিত। হয়তো দু'চারটা চড় থাপ্পড় বেশিও পেতে পারে। তমার গলা দিয়ে একটা ভারী দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো৷ সে আলতো করে হাত রাখলো নিজের পেটে। কিছু একটা অনুভব করলো সে৷ একটা অস্তিত্বের অনুভূতি। যেই অনুভূতিটার স্বাদ সে আরো দু'বার পেয়েছিল। কাল রাতে তৃতীয় বারের মতো পেলো সেই অনুভূতি। যেই অনুভূতিটি তাকে আগমনী বার্তা পাঠিয়েছে। কেউ একজনের জন্ম হওয়ার বার্তা৷ সেই বার্তাটাই তমার আত্মনাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তাকে আঁটকেছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পাপটি থেকে৷ হঠাৎই ভীষণ কান্না পেল তমার৷ কেন পেল তা সে জানে না৷ এই পৃথিবীর কেউই জানে না৷  তমার চোখ জলে ভরে গেল। মেয়েটা মুখে আঁচল টেনে কান্না শুরু করে দিলো৷ গা কাঁপিয়ে কান্না করতে থাকলো সে৷


ভুলত্রুটি মার্জনীয়
-তাসফি আহমেদ।




Next Post Previous Post
1 Comments
  • Mugdho's creations
    Mugdho's creations ৪ নভেম্বর, ২০২০ এ ৯:৩৩ PM

    Just awsome

Add Comment
comment url